বেলুড় মঠের দুর্গাপূজা- প্রথম দুর্গাপূজা
বেলুড় মঠের শারদীয়া দুর্গাপূজার ঐতিহ্যগত তাৎপর্য হলো ১৯০১ সালে স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দের দ্বারাই এই পূজা প্রথম অনুষ্ঠিত হয় এবং পরমারাধ্য শ্রীশ্রীমা সারদাদেবীও এই পূজার সময় বেলুড় মঠে উপস্থিত ছিলেন স্বামীজীর ইচ্ছানুসারে| শ্রীশ্রীমায়ের নামেই এই পূজার 'সঙ্কল্প' করা হয় (এবং আজও সেই ধারা চলে আসছে)| আসলে সন্নাসীগণ 'সঙ্কল্প' করে কোনো পূজা বা বৈদিক ক্রিয়াকান্ড করার অধিকারী নন বলেই আদর্শ গৃহস্থ-আশ্ৰমী শ্রীশ্রীমা (যদিও ত্যাগ-তপস্যায় তিনি সন্ন্যাসীরও শিরোমণি) নামেই বেলুড় মঠের দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়| বিষয়টি খুব অভিনব এই কারণে যে, শ্রীশ্রীমায়ের দেহত্যাগের এতো বছর পরেও সেই একই ধারায় বেলুড় মঠের পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে| অথবা স্বামীজী যে কল্পনা করতেন শ্রীশ্রীমাকে 'জ্যান্ত দূর্গারূপে', প্রতি বছর মৃন্ময়ী মূর্তিতে কী সেই চিন্ময়ী মায়েরই অধিষ্ঠান হয়? আমরা এও জানি, স্বামীজী 'আগমনী' গান বড়ই ভালবাসতেন এবং নিজেও গাইতেন | স্বয়ং শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেব ও স্বামীজীর কণ্ঠে 'আগমনী' গান শুনে সমাধিস্থ হয়েছিলেন| বেলুড় মঠেও প্রায়ই একটি 'আগমনী' গান গাইতেন তাঁর প্রিয় বিল্ববৃক্ষতলে বসে| গানটি হলো-
"গিরি গণেশ আমার শুভকারী,
পূজে গণপতি পেলেন হৈমবতী
চাঁদের মালা যেন চাঁদ সারি সারি||
বিল্ববৃক্ষমূলে পাতিয়া বোধন,
গণেশের কল্যাণে গৌরীর আগমন,
ঘরে আনব চন্ডী, কর্ণে শুনবো চন্ডী
আসবে কত দন্ডী জটাজূটধারী|"
সংকলন: বেলুড় মঠে স্বামীজীর দুর্গাপূজা (স্বামী দেবেন্দ্রানন্দ) [উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা]
No comments:
Post a Comment